Monday, March 4, 2013

Loss Weight



জিমে না গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ

সারা বিশ্বে এখন স্লিম ফিগারের জয়জয়কার মেদবিহীন ছিপছিপে আকর্ষণীয় দেহের গড়ন সবার প্রিয়এই প্রত্যাশা পূরণ খুব একটা কঠিন কাজ নয়পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে স্বাভাবিক ওজন আর সুস্থ শরীরের অধিকারী হওয়া সহজেই সম্ভবএর জন্য খুব বেশি প্রচেষ্টা কিংবা নিয়মিত জিমে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই

মোটা হওয়ার কারণ
  • সাধারণত বংশগত কারণেই মোটা হওয়ার প্রবণতা থাকে
  • অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ মোটা হওয়া বা ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ
  • পরিশ্রমহীন অলস জীবনযাপনও মোটা হওয়ার কারণ
  • আধুনিক জীবনযাত্রায় ফাস্টফুড খাওয়া মোটা হওয়ার জন্য দায়ী
  • অ্যালকোহল এনার্জি/হেলদি ড্রিঙ্কস, সফট ড্রিঙ্কস ইত্যাদি ফ্যাশনেবল কোমল পানীয় মোটা হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় হচ্ছে সুষম খাদ্য তালিকা, যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেড এবং ফাইবার আছে, মাঝারি পরিমাণে প্রোটিন আছে এবং কম পরিমাণে ফ্যাট আছে
এ জন্য যা করতে হবে-
  • আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী এবং আপনার পছন্দ-অপছন্দের খাবার বর্তমান খাদ্যাভ্যাস এবং আপনার কাজের দিকে লক্ষ রেখে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা তৈরি করুন
  • খাদ্য তালিকায় যাতে আঁশযুক্ত খাবার, ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যথেষ্ট পরিমাণে থাকে সেদিকে লক্ষ রাখুন
  • অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া কমাতে সব ধরনের চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন
  • শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে ফল ও শাক-সবজি খাবেন
  • অসময়ে খিদে পেলে স্বাস্থ্যসম্মত স্ন্যাক্স খাবেন
  • দুপুর এবং রাতের খাবারের মাঝে অথবা খুব খিদে পেলে শুকনো রুটি, টোস্ট বিস্কুট, মৌসুমি ফল, ফলের রস সবজির রস, কিংবা সিদ্ধ শাক-সবজি বা সালাদ খেতে পারেন
  • হেলদি ড্রিঙ্কস, এনার্জি ড্রিঙ্কস, সফট ড্রিঙ্কস ইত্যাদি কোমল পানীয় একেবারেই খাবেন নামনে রাখবেন, যে কোনো ধরনের কোমল পানীয় মোটা হওয়ার আশঙ্কা ৬০ ভাগ বাড়িয়ে দেয়
  • বারবার অল্প করে খাবেনতবে লাঞ্চ বা ডিনারের সময় অবশ্যই কম খাবেন
  • রাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করবেন
  • কখনোই স্টাভেশন ডায়েট বা উপোস করবেন নাএ পদ্ধতিতে দ্রুত ওজন কমানো গেলেও শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে নানাবিধ রোগব্যাধি দেখা দেয়
 
বাড়িতে ব্যায়ামের কিছু পদ্ধতি
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িতে নিচের ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়ামগুলো করুনএতে সময় একেবারেই কম লাগেঅথচ আপনি কর্মক্ষম বা ফিট থাকতে পারবেন এবং শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমা হবে না

স্পট জগিং
শরীর সুস্থ রাখার জন্য জগিং খুব ভালো ব্যায়ামবাড়ির বারান্দা বা যে কোনো জায়গায় ২ থেকে ৫ মিনিট স্পট জগিং করবেন

স্টেচিং
বিভিন্ন ধরনের স্টেচিং ব্যায়ামযেমন আর্ম স্টেচিং বা লেগ লিফটিং করতে পারেনএটি ২ থেকে ৫ মিনিট করবেনএতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং বিভিন্ন অংশের ফ্যাট ঝরে

আর্ম ফ্রন্ট রাইজ এবং সাইড রাইজ
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত সোজা করে একসঙ্গে সামনের দিকে মাথার ওপরে তুলবেন এবং নামিয়ে আনবেন ১৫ থেকে ২৫ বারএকইভাবে দুহাত সোজাভাবে শরীরের দুপাশ থেকে মাথার ওপর তুলবেন এবং নামাবেন ১৫ থেকে ২৫ বার

ফ্রন্ট ব্যান্ডিং এবং সাইড ব্যান্ডিং
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুহাতের তালু মাথার পেছনে রাখুন, এরপর পিঠ সোজা রেখে সামনের দিকে যতটা সম্ভব ঝুঁকবেন এবং আবার দ্রুত সোজা হবেন, এভাবে ১০ থেকে ১৫ বার ফ্রন্ট ব্যান্ডিং করুনএরপর দুই পা পরস্পর ২ থেকে ৩ ফিট দূরত্বে রেখে মাথার পেছনে দুহাতের তালু  রেখে প্রথমে ডানদিক যতটা সম্ভব ঝুঁকুনএরপর দ্রুত সোজা হয়ে আগের অবস্থানে আসুনএকইভাবে বাম পাশে ঝুঁকুন এবং দ্রুত সোজা হোনএভাবে ১৫ থেকে ২০ বার এই সাইকেলটি রিপিট করুন

পুশ-আপস
পুশ-আপস বা বুকডন করলে চেস্ট এবং আর্মস মাসলের শক্তি বাড়েপুশ-আপসের সময় লক্ষ রাখবেন যেন হাঁটুতে ভাঁজ না পড়ে এবং হাঁটু, কোমর বা পিঠ একই সমতলে থাকে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ বার এই পুশ-আপস বা বুকডন করবেন

সিটস-আপস
ভুঁড়ি কমাতে এবং পেটের মাসলের স্ট্রেংথ বাড়াতে সিটস-আপস অত্যন্ত কার্যকরমাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে দুই হাত বিপরীতে কাঁধের ওপর (ডান হাত বাম কাঁধের ওপর এবং বাম হাত ডান কাঁধের ওপর) রাখুনএরপর কোমরের ওপর ভর দিয়ে শরীরের ওপরের অংশ আস্তে আস্তে মাটি থেকে যতটা সম্ভব তোলার চেষ্টা করুন (সম্ভব হলে বসুন) এবং মাঝামাঝি অবস্থানে ৫ সেকেন্ড থাকুনআবার আস্তে আস্তে শোয়া অবস্থায় ফিরে যানএভাবে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি সিটস-আপস করবেন

স্কিপিং
স্কিপিং বা দড়িলাফ, দড়ি ছাড়াও করা যেতে পারেদুই হাত দুই দিকে সোজাভাবে প্রসারিত করে কাঁধ বরাবর রাখুনএবার পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে ১ মিনিট লাফানএরপর ১ মিনিট করে বিরতি দিয়ে ৩ থেকে ৫ বার সাইকেলটি রিপিট করুন
মনে রাখবেন সুস্থ থাকার চাবিকাঠি আপনার হাতেইতাই ধূমপান, মদ্যপানসহ সব ধরনের বদঅভ্যাস ত্যাগ করুনমিষ্টি, চর্বিজাতীয় সব খাবার এবং ভাজাভুজা খাবার এড়িয়ে চলুনস্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হোনপ্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যাই ঘটুক না কেন সময় ও সুযোগ করে নিয়ে বাড়িতে থেকেই নিজে নিজে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করে নিনস্বাস্থ্যসম্মত পরিমিত খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম-এ দুটি হচ্ছে জিমে না গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার মূলমন্ত্র

পোষ্টটি ভাল লাগলে লাইক ও শেয়ার দিবেন

No comments:

Post a Comment